সে দিন কবিতার কাছে নালিশ জানিয়ে এসেছি
তার দোষ নেই জেনেও তাকে কাঁদিয়ে এসেছি
ইংরেজী শিখেছ ভাল কথা, সে বলে
তোরা বাপ-দাদার ভিঠেতে পদধূলা দিবি নে ?
খোজ খবর নিবি নে ?
বাঙালীতে কোনো ফলক দেখলে পড়তে পারবি নে ?
তোরা কেন ভুলে যাবি!
কোন গায়ের, কোন গলিতে, কোন মোড়ে, কোথায় ছিল
তোদের মামার বাড়ী ?
গিয়ে কিছুক্ষণ কেন দাড়াবি না তোর পিসিমার ঘরে ?
দেখলে কি কাপড় দিবি নাকে যেন আজব গন্ধ পাচ্ছ!
বৌমা কি ঘোমটা দিবে মাথায় যেন লজ্জায় মরে যাচ্ছ!
সাবধান বলে দিচ্ছি !
সময় থাকতেই তোরা বাগান বাড়ীটার দেখাশোনা কর
এটি গ্রাম্য জায়গা।
সবার একটা সরল, সহজ, আদুরে অতল মন আছে !
নদী, পাহাড়, ঝরণার মাঝ দিয়ে
এখানে কত অভ্রময় পথ!
শোভা বাড়াবে বরং, কমাবে না।
নীল আকাশ, খোলা মাঠ, ঝিলের পার সেকি শহরে থাকে ?
বৌমাকে সংগে নিয়ে ছেলে-পুলে সহিত পূজোতে চলে আয় বাবা
একা হয়ে পড়ে পড়ে বাগান বাড়ীটা মর্চে ধরেছে জান ?
কেউ যদি তোরা না দেখিস
আমার কথা না শুনিস
আমি সব কিছু ভেঙ্গে চুড়ে পালিয়ে দূরে কোথায় যেন হারিয়ে যাব
এই গ্রন্থলোক ছেড়ে।
সেদিন চুল আচঁড়ে দিয়েছিলাম বৌমার
ঝড়ে ঝড়ে বয়ে যাচ্ছিল আমার বাসনার দীপাবলি
মা যে আমি ! কিন্তু এ কি ?
কোথায় যেন হারিয়ে গেছে বৌমার গোলাপি কাব্যিক ঠোঁট
শব্দময় গহন চাহনি ভরা চোখ!
দেখ বাবা ! উরন্ত পতংগের মতন শিখায় ডুবিয়ে
মরতে যাবি না কিছুতেই!
বাড়তি অলংকারে যতই বা সাজিয়ে না তুলিস তোরা নিজেকে!
ভেতরের সুন্দরতাই মানায় বেশ।
তোদের তাই বলি! আয়, তোরা আয়; আমার বুকে আয় !
দেখ কত আলো ছড়িয়ে রেখেছি
গড়ে তুলেছি নুতন শব্দর খেত আর সবুজ গাছপালা
তোরাই তো ভবিস্যতের সৃষ্টিকামী সুনাগরিক,
মাতৃভাষার আদর কর বাবা।
আক্ষেপ থাকে না যেন পরে !
খুলে দেখ তো একবার বন্ধ হয়ে থাকা তোদের
মাতৃভাষার জমজমাট অভিধান।